চেকের মামলার আপীল এর নমুনা।

Post No- 118

মোকাম বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা

ফৌজদারী আপীল  নং-            /২০১৮

উদ্ভুতঃ দায়রা মামলা নং- ৪৩৫৩/১৪

সি. আর মামলা নং- ৪৫৬/১৩

ধারাঃ এন, আই, অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা।

বিষয়েঃ ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০৮ ধারা মতে আপীল দায়ের প্রসঙ্গে।

এবং বিষয়েঃ

হাজী আরিফ

পিতা-

সাং- ৯নং আর, এন, ডি রোড

থানা- লালবাগ, জেলা- ঢাকা।

——–আপীলকারী/আসামী।

=বনাম=

১।    হাজী মোঃ সেলিম

      পিতা-

      সাং- ২/১, আর, এন, ডি,রোড

থানা- লালবাগ, জেলা- ঢাকা।   

২।     রাষ্ট্র পক্ষে বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর

মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা।

                                ——–রেসপনডেন্ট।

এবং বিষয়েঃ

বিজ্ঞ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ, ১ম আদালত, ঢাকা কর্তৃক ৪৩৫৩/১৪ নং দায়রা মামলায় বিগত ০৬/১১/২০১৭ ইং

চলমান পাতা-০২

পাতা-০২

তারিখের রায় ও দন্ডাদেশ দ্বারা অত্র আপীলকারীকে দি নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক দোষী সাব্যস্ত করতঃ আপীলকারীকে ০৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান এবং ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ করা হয় বিধায় উক্ত রায় ও দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হইয়া আপীলকারী অত্র আপীল দায়ের করিলেন।

আপীলকারীপক্ষে বিনীত নিবেদন এই যে,

১।    যেহেতু আপীলকারীর বিরুদ্ধে ১ নং রেসপনডেন্ট বাদী হইয়া বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দি নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারা মোতাঊেশ ৪৫৬/১৩ নং সি. আর. মামলা দায়ের করেন। ১ নং রেসপনডেন্টের মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নরূপঃ

(ক)   অত্র মোকদ্দমার বাদী একজন সহজ, সরল, নিরীহ, ব্যবসায়ী, সম্ভ্রান্ত মুসলিম পারিবারের আইন মান্যকারী, বয়স্ক ব্যক্তি বটে। পক্ষান্তরে আসামী একজন শঠ, প্রতারক, পরধনলোভী, আইন অমান্যকারী ও ওয়াদা ভঙ্গকারী ব্যক্তি বটে।

(খ)   অত্র মোকদ্দমার আসমী ২য় পক্ষ, ১ম পক্ষ/বাদীর নিকট হইতে বিগত ১০/০৫/২০১৩ ইং তারিখে ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা ঋণ গ্রহণ করিয়া ঋণের বিপরীতে বিগত ১০/০৬/২০১৩ ইং তারিখে সোনালী ব্যাংক লিঃ লালবাগ রোড শাখা, ঢাকা এর চলতি হিসাব নম্বও ১০৩৫ এর ৯৭৪৭০৫৬ নং একটি চেক ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা বাদীকে প্রদান করেন।

(গ)   অতঃপর বাদী/১ম পক্ষ উক্ত চেকটি বিগত ১০/০৬/২০১৩ ইং তারিখে সোনালী ব্যাংক লিঃ, লালবাগ রোড শাখায় উপস্থাপন করিলে ব্যাংক হইতে একটি রশিদের মাধ্যমে বাদীকে জানান যে, আসামীর একাউন্টে টাকা অপর্যাপ্ত (ওহংঁভভরপরবহঃ ভঁহফ) ফলে বাদীকে ব্যাংক হইতে চেক ফেরতের রশিদ সহ উক্ত তারিখেই চেকটি ফেরত প্রদান করেন। বিষয়টি আসামীকে মৌখিকভাবে জ্ঞাত করিলে আসামী কোন কর্নপাত করে নাই।

চলমান পাতা-০৩

পাতা-০৩

(ঘ)   অতঃপর আসামীকে বিগত ২০/০৬/২০১৩ ইং তারিখে লিখিতভাবে লিগ্যাল নোটিশটি বিগত ২৩/০৬/২০১৩ ইং তারিখে এ/ডি সহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করিলে আসামী ২৬/০৬/২০১৩ ইং তারিখে নোটিশ প্রাপ্ত হইয়া অদ্য পর্যন্ত বাদীর সহিত কোনরূপ যোগাযোগ করে নাই কিংবা বাদীর টাকা পরিশোধ করিয়া আসামী চেক ফেরত নেয় নাই।

(ঙ)  যেহেতু অত্র মোকদ্দমার বাদী একজন ট্যাক্স প্রদানকারী ব্যবসায়ী। আসামী তাহার ব্যবসায় বিনিয়োগের নিমিত্তে বাদীর নিকট হইতে নগদ ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা গ্রহণ করিয়া একমাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা থাকিলেও অদ্য পর্যন্ত বাদীর টাকা পরিশোধ করে নাই।

(চ)   অতঃপর  বাদী বিগত ২০/০৬/২০১৩ ইং তারিখে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করিলে আসামীর সোনালী ব্যাংক লিঃ লালবাগ রোড শাখার চলতি হিসাব নং -১০৩৫- এ টাকা অপর্যাপ্ত থাকায় চেকটি ডিজঅনার হওয়ায় বাদীকে ফেরত প্রদান করেন। বিষয়টি আসামীকে জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে জ্ঞাত করা সত্বেও বাদী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় বাদী এন, আই, অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করেন।

২।    অতঃপর আপীলকারী মুখ্য মহানগর হাকিম এর আদালত, ঢাকা হইতে জামিন লাভের পর উক্ত মামলাটি বিজ্ঞ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ, ১ম আদালত, ঢাকাতে বিচারের জন্য বদলী হইয়া আসে এবং দায়রা মামলা নং ৪৩৫৩/১৪ হিসাবে নিবন্ধিত হয়।

৩।   পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত বাদীর স্বাক্ষ্য গ্রহন করে  এবং বিগত ০৬/১১/২০১৭ ইং তারিখে রায় ও দন্ডাদেশ দ্বারা আপীলকারীকে এন, আই, অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা জরিমানা করেন।

৪।    যেহেতু বর্তমান আইন অনুসারে চেকের ৫০% টাকা জমা প্রদান করে আপীল দায়ের করতে হয় সেই মোতাবেক আপীলকারী বাদীর মামলার চেকের উল্লেখিত ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকার অর্ধেক ১,৯০,০০০/- (এক লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা গত ২৯/১১/২০১৭ ইং তারিখে ২৪৯ নং ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে

চলমান পাতা-০৪

পাতা-০৪

জমা প্রদান করেন এবং ঐ দিনই আপীলকারী উচ্চ আদালতে আপীলের শর্তে জামিন লাভ করেন।                                                    

৫।   যেহেতু বিজ্ঞ বিচারিক আদালত আপীলকারীকে ৩০ দিনের মধ্যে আপীল দায়ের করার আদেশ প্রদান করেছিলেন। কিন্তু আপীলকারী আসামী ভুলবশতঃ রায়ের পরিবর্তে রায়ের আদেশ উত্তোলন করায় যথাসময়ে বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করিতে পারেন নাই। ইতোমধ্যে আপীলকারীর জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আপীলকারী বিজ্ঞ বিচারিক আদালতে ২৬/০২/২০১৮ ইং তারিখে জামিনের মেয়াদ বর্ধিত করণের আবেদন করিলে বিজ্ঞ আদালত শুনানীঅন্তে সন্তুষ্ট হয়ে আপীলকারীর জামিনের মেয়াদ আরো ১৫ দিনের জন্য বর্ধিত করেন।

৬।   যেহেতু আপীলকারী বিজ্ঞ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ, ১ম আদালত, ঢাকা কর্তৃক বিগত ০৬/১১/২০১৭ ইং তারিখের রায় ও দন্ডাদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইয়া নিম্ন লিখিত হেতুবাদে অত্র আপীল দায়ের করিলেন।

হেতুবাদসমুহঃ

(ক)   বিজ্ঞ বিচারিক আদালত মনগড়াভাবে গত ০৬/১১/২০১৭ ইং তারিখে যে রায় ও আদেশ প্রদান করেন তাহা রদ ও রহিত হইবে।

(খ)   বিজ্ঞ বিচারিক আদালত বিচারিকসুলভ মনোভব না নিয়া যে রায় ও আদেশ প্রদান করেন তাহা রদ ও রহিত হইবে।

(গ)   বিজ্ঞ বিচারিক আদালত রেসপনডেন্ট/বাদী পক্ষের দ্বারা পক্ষাশ্রিত হয়ে যে রায় ও আদেশ প্রদান করেন তাহা রদ ও রহিত হইবে।

(ঘ)   বিজ্ঞ বিচারিক আদালত মামলার কাগজপত্র ও নালিশের জবানবন্দি সঠিকভাবে অনুধাবন না করিয়া যে রায় ও আদেশ প্রদান করেন তাহা রদ ও রহিত হইবে।

(ঙ)   বিজ্ঞ বিচারিক আদালত আপীলকারীকে জেরা করার সুযোগ হইতে বঞ্চিত করিয়া যুক্তিতর্ক শুনানী না করিয়া একতরফা ভাবে  যে রায় ও আদেশ প্রদান করেন তাহা রদ ও রহিত হইবে।

(চ)   অন্যান্য হেতুবাদসমুহ আপীল শুনানীকালে পেশ করা হইবে।

চলমান পাতা-০৫

পাতা-০৫

অতএব, উপরোক্ত অবস্থা ও কারণাধীনে ন্যায় ও সুবিচারের স্বার্থে উক্ত আপীল মামলাটি গ্রহণ করতঃ মামলার নথি তলব পূর্বক রেসপনডেন্টপক্ষকে নোটিশ দিয়া শুনানীর দিন ধার্য্য করিয়া শুনানী অন্তে বিগত ০৬/১১/২০১৭ ইং তারিখের তর্কিত রায় ও দন্ডাদেশ রদ, রহিত ও বাতিল করিয়া আপীলকারী আসামীকে উক্ত মামলার দায় হইতে বেকসুর খালাস প্রদান করিয়া ন্যায়বিচার করিতে বিজ্ঞ আদালতের মর্জি হয়।