নিকাহ্‌নামা বাধ্যকর নহে মর্মে ঘোষনামূলক মামলা। পারিবারিক আদালত।

post no- 139

মাননীয়,

        সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত, লোহাগাড়া

জেলা-চট্টগ্রাম।

সূত্রঃ পারিবারিক-        /২০২৪ইং

নিকাহ্‌নামা বাধ্যকর নহে মর্মে ঘোষনামূলক ডিক্রির আবেদন।

মোকদ্দমার সংখ্যা- ১২,০০,০০০/-

মোঃ ইব্রাহিম (৩৮),

পিতা- মকবুল আহমদ,

সাং- কুরিগ্রাম, ৫নং ওয়ার্ড,

থানা- লোহাগাড়া,

জেলা- চট্টগ্রাম।

………বাদী।

-বনাম-

ইসরাত জাহান (১৮),

পিতা- মোঃ ইউনুছ, সাং- রাধানগর,

থানা- বাঁশখালী,

জেলা- চট্টগ্রাম।

   ………বিবাদী।

উপরোক্ত বাদী বিজ্ঞাদালতে নিম্ন মতে নিবেদন করেন যে,

১। বাদী অত্র আদালতের এখতিয়ারিধীন চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাস্থ্য  কুরিগ্রাম গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা হয়। বাদী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এবং বর্তমানে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিঃ ফেনী শাখা, ফেনী, অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্যাশ) পদে কর্মরত আইনমান্যকরী একজন ব্যক্তি হয়। বাদীর বাবা প্যারালাইসিস রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত একজন বয়োঃবৃদ্ধ শয্যাশায়ী ব্যক্তি। বাদীর পিতা বাংলাদেশ স্টিল মিল কর্পোরেশন হতে অবসর গ্রহণের পরপরই ভাই বোনদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব বাদীর উপর অর্পিত হয় এবং বাদী পরিবারের বড় সন্তান ও একমাত্র

চলমান পাতা- ০২

পাতা- ০২

উপার্জনকারী ব্যক্তি হওয়ায় বাদীর বিবাহর বয়স হলেও পারিবারিক টানাপোড়েন, স্বীয় আর্থিক দৈন্যতা, সমপর্যায়ের শিক্ষা আর্থ-সামাজিক অবস্থান প্রভৃতিসম্পন্ন পাত্রীর কাবিনের উচ্চ মূল্য, বিবাহ অনুষ্ঠানের মাত্রাতিরিক্ত খরচসহ নানা কারনে বিবাহ করা সম্ভব হয়নি। যার কারনে বাদী ”মোহরে ফাতেমি” অর্থাৎ বাদীর সাধ্যানুযায়ী নগদ মোহর প্রদান ও ওয়ালিমার মাধ্যমে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পরিবার পরিজন সহ আত্মীয়-স্বজনকে উক্ত সিদ্ধান্ত জানালে ইতোঃপূর্বে বাদীর পরিবারে উক্তরূপে কোন বিবাহ সম্পন্ন না হওয়ায় এবং সামাজিক বাস্তবতার কারণে বাদীর পরিবারের সদস্যগণসহ নিকট আত্নীয় স্বজনের কেউই উক্ত সিদ্ধান্তকে জোরালো সমর্থন করেনি। এতদ্ সত্ত্বেও বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে বাদী উক্ত সিন্ধান্তে অটল থাকিয়া পাত্রীর খোঁজখবর নিতে থাকে। বাদী বিগত ২৫/১২/২০২২ইং তারিখে বিবাদী পক্ষের নিকট আত্নীয় অর্থাৎ বিবাদীর খালু বাধানগর নিবাসী জৈনক ইকবাল হোসেন নামীয় ব্যক্তি খবর জানান যে, তার একই পাড়ার অত্র মামলার বিবাদী ইসরাত জাহান আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ফাজিল ১ম বর্ষে পড়ুয়া অত্যন্ত নম্রভদ্র স্বভাবের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের অত্যন্ত পর্দানশীল কন্যা, যার পিতা কুয়েত প্রবাসী। উক্ত খবর পেয়ে ছবিসহ বায়োডাটা বিনিময়ের মাধ্যমে বিবাদী পর্দানশীল বিধায় বাদী ধর্মীয় রীতি অনুসারে বাদীর ২ চাচাতো বোন নুরের জাহান এবং তাহামিনা আক্তারকে নিয়ে বিগত ০৯/০১/২০২৩ইং তারিখে তাদের বাড়িতে দেখতে যায় এবং বিবাদীকে প্রাথমিক দর্শনে পর্দানশীল এবং কথাবার্তায় মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছাত্রী বলে মনে হওয়ায় প্রাথমিকভাবে বাদী তাহাতে বিবাহ করার মনস্থির করে। অতঃপর কর্মস্থল থেকে ছুটি না পাওয়ায় মাস দুয়েক পরে বাদী পারিবারিকভাবে অগ্রসর হইয়া পরিবারের মুরুব্বিদের নিয়ে বিবাদীকে দেখিতে যায় এবং সামাজিক রীতি অনুসারে মুখ দেখা বাবদ ৫০০০/- টাকা প্রদান করে। তদ্ পরবর্তীতে বোঝাপড়ার সুবিধার্থে বাদী বিবাদীর মাতার অনুমতি নিয়া বিবাদীর সাথে ফোনে কথা বলিয়া এবং পারিবারিক সম্মতি লইয়া বাহিরে দেখা করিয়া বাদীর পারিবারিক অবস্থা, দায় দায়িত্ব, আয় উপার্জন ইত্যাদি আনুসঙ্গিক বিষয়সহ তাহাকে মোহরে ফাতেমী বিনিময়ে ওয়ালিমা অনুষ্ঠানের মাধ্যমিক বিয়ে করার বিষয়টি অবহিত করে। উক্ত প্রস্তাব শুনে বিবাদী ও তার মাতাকে পুরো বিষয়টি অবহিত করিলে বিবাদীর মাতা বাদীপক্ষকে জানায় যে, তিনি তার প্রবাসী স্বামী অর্থাৎ বিবাদীর পিতা ও তার ভাইদের সাথে আলোচনা করিয়া পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন। কিন্তু তিনি আর কোন খবর না দেওয়ায় এবং বিবাদীও কোন যোগাযোগ না করায় বাদী তাদের বিষয়ে গভীরভাবে খোঁজখবর করিয়া জানিতে পারেন যে, বিবাদী ইসরাত জাহান আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ফাজিল ১ম বর্ষের ছাত্রী নহে বরং তিনি একই মাদ্রাসার আলিম ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী হয়। এমনকি তাহারা তাদের স্থায়ী ঠিকানার সঠিক তথ্য প্রদান করেননি। বাদীপক্ষ আরো খোঁজখবর নিয়া জানিতে পারেন যে, বিবাদী

চলমান পাতা- ০৩

পাতা- ০৩

বিবাহর বয়স হয় নাই। উক্ত বিষয়টি বাদী নিশ্চিত হইবার জন্য বারংবার বিবাদীকে ফোন করিলে এক পর্যায়ে বিবাদী ফোন রিসিভ করিয়া কথাবার্তার মাধ্যমে বাদীকে চাপ প্রয়োগ করিলে বিবাদী নিজে তাহার সঠিক জন্ম তারিখ জানায় এবং একই সাথে সে আলিম ১ম বর্ষের ছাত্রী বলিয়া স্বীকার করে। উক্ত তথ্যও যাচাই করিবার লক্ষে বাদী বিবাদীর জন্মসনদ ও শিক্ষাগত সনদের এর কপি দেখিতে চাহিলে বিবাদী বিনিমেয় বাদীর ভোটার আইডি কার্ড, জন্মসনদ ও শিক্ষাগত সনদ চায়। বাদী তাহার বয়সের তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যে উক্ত কাগজাদি বিনিময়ের মাধ্যমে বিবাদীর জন্ম সনদ সংগ্রহ করিয়া চূড়ান্তভাবে নিশ্চিৎ হোন যে, বিবাদী জন্নাতুল নাঈমের জন্ম তারিখ ২১/০৯/২০০৫ এবং সে বিবাহর উপযুক্ত নহে। এমতাবস্থায় বাদী বিবাদীকে বিবাহ করিলে আইনগতভাবে অপরাধ সংঘটিত হইবে বিধায় এবং উক্ত কারণে বাদীর চাকরির ক্ষতি হইবার আশঙ্কার বিষয়টি অবহিত করেন বিবাদী পক্ষকে এবং তারা উক্তরূপ স্পর্শকাতর তথ্য গোপন করিয়া অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা করায় অত্র মামলার বিবাদীকে বাদীর বিবাহ করা সম্ভব নহে মর্মে বিবাদীপক্ষকে জানায় এবং বিয়ের পূর্ব আনুষ্ঠিকতামূলক বিবাদীর মুখ দেখা বাবদ প্রদত্ত ৫০০০/- টাকাসহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে ইতিমধ্যে প্রদত্ত কাগজাদি ফেরত চাইলে বিবাদীর মাতা উক্ত বিষয়টিকে ভুল বুঝাবুঝি অবকাশ আছে দাবি করিয়া সামনাসামনি কথা বলিবার জন্য টাকা এবং প্রদত্ত কাগজপত্র ফেরত নেওয়ার জন্য তাদের বাড়ীতে যাইতে বলে।

৩। উপরোক্ত দফায় বর্ণিতমতে বাদী কর্তৃক প্রদত্ত কাগজপত্র ফেরত আনিবার জন্য বাদী তাহার কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়া বিবাদীকে পূর্বেই অবহিত করিয়া বাদী নিজে একাই গত ২৫/০২/২০২৩ ইং তারিখে আনুমানিক ১১.৩০ ঘটিকায় সরল বিশ্বাসে বিবাদীর বাড়িতে যায়। বাড়িতে যাওয়া মাত্রই বিবাদীপক্ষের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কোন ধরনের কথাবার্তা ছাড়াই বাড়ির দরজা বন্ধ করিয়া বাদীকে বেআইনিভাবে আটক করিয়া রাখে। বিবাহ না করিলে তাহার সহিত কথাবার্তা কেন বলিতেছে তাহা জানিতে চেয়ে বিবাদী বাদীর সহিত উচ্চ বাক্যে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করিয়া এক পর্যায়ে নিরীহ বাদীর‌ শার্টের কলার চেপে ধরে। বাদী তখন বিবাদী ও তাহার পরিবারের লোকজন কতৃক অভিন্ন অসৎ অভিপ্রায়ে বিবাদীর বয়স গোপন, শিক্ষাগত যোগ্যতা এমন কি ঠিকানার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করিয়া প্রতারণা অপরাধ সংঘঠিত করিবার বিষয়টি দেখাইয়া দিলে বিবাদীপক্ষের লোকজন একসাথে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে এবং বিবাদীর মা ও মামা মোঃ ইসমাইল জোরপূর্বক বল প্রয়োগ করিয়া বাদীকে ঘরের পৃথক একটি রুম বন্দী করিয়া রাখে এবং বিবাদীপক্ষ বাদীর পরিবারের সদস্যদের কে উদ্দেশ্য করিয়া অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। তাহাদের উক্তরূপ উশৃংখল আচরণ সত্ত্বেও বাদী অত্যন্ত ভদ্রভাবে বাদীর প্রদত্ত ৫,০০০/- টাকা ও কাগজাদি ফেরত চাহিয়া চলিয়া আসিতে

চলমান পাতা- ০৪

পাতা- ০৪

চাহিলে বিবাদী পক্ষের লোকজন বলে, টাকা ফেরত তো দূরের কথা, এখনই বিবাদীকে ২০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করিতে হইবে,  তা না হলে সাংবাদিক ডাকিয়া ভিডিও করিয়া ভাইরাল করিয়া দিব, বাদীর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানাইয়া দিয়া চাকরি খাইয়া ফেলিব। বাদী তাহাদের আচরণে বাধ্য হইয়া বাদীর মোবাইল বাহির করিয়া ৯৯৯ এ ফোন করিতে চাহিলে বিবাদীর মামা মোঃ ইসমাইল বাদীর মোবাইল ফোন কাড়িয়া নিয়া যান এবং বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন বাদীকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য গলা চেপে ধরিয়া শ্বাস রোধ করার চেস্টা করে। বাদী চিৎকার করিতে চাহিলে বিবাদীর মামা বাদীর গলায় আরো জোর দিইয়া চাপিয়া ধরে এবং বিবাদীর বাড়ীর লোকজন ঘরের দরজা-জানালাগুলো বন্ধ করিয়া দেয়। তখন বিবাদীর মা তাহাদের ঘরের ভেতরের রুম হইতে ১০০ টাকার ৩ টি খালি স্টাম্প নিয়া আসে এবং সকল আসামি মিলে আমাকে ভীত সন্ত্রস্ত করিয়া জোরপূর্বক তিনটি স্ট্যাম্প এ স্বাক্ষর করিতে বলে। বাদী রাজি না হইলে বিবাদীপক্ষ বাদীকে গলা টিপিয়া হত্যা করবে মর্মে ভয়ভীতি দেখাইলে বাদী নিরুপায় হইয়া স্ট্যাম্প তিনটিতে তাহাদের কথামতো কয়েকটি স্বাক্ষর করে। বাদী উক্ত স্বাক্ষর বাংলায় করায় বিবাদীপক্ষের লোকজন উক্ত স্বাক্ষর সঠিক নহে বলিয়া সন্দেহ করে অতঃপর আরও ৩টি ১০০ টাকার খালি স্ট্যাম্প আনিয়া ইংরেজী স্বাক্ষর করিতে বলিলে বাদী নিরুপায় হইয়া তাদের কথামতো ইংরেজিতেও স্বাক্ষর করে। পরে তাহারা আরো ২ টি নীল কাগজে বাংলায় ও ইংরেজিতে বাদীর স্বাক্ষর নিয়া ২ মাসের মধ্যে ২০ লক্ষ টাকা কাবিন এবং ১০ ভরি স্বর্ণ দিয়া বিবাদীকে বিয়ের আয়োজন করিতে হইবে না হইলে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা করিয়া জেল খাটাইবে বলইয়া হুমকি প্রদান করে। বাদী অসহায় অবস্থায় তাহাদের বাড়ি হইতে চলিয়া আসার সময় আসামিরা বাদীর মোবাইল ফোন ফেরত প্রদান করিলেও ৫,০০০/- টাকা ফেরত প্রদান না করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে। লোক লজ্জার ভয়ে বাদী বাড়িতে চলিয়া আসে এবং সাক্ষীগণসহ মুরুব্বীদের উক্ত ঘটনা জানাইলে তাহারা আইনের আশ্রয় গ্রহণের পূর্বে আসামিদের সাথে সামাজিকভাবে আপোষে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। বিবাদী পক্ষের লোক্ষের লোকজন বিবাদীর ভবিষ্যতের স্বার্থে প্রথমে আপোষে বিষয়টি সমাধান করিবে মর্মে আশ্বাস প্রদান করিলেও পরবর্তীতে কোন যোগাযোগ না করায় বাদী বাধ্য হইয়া বিগত ৩০/০৫/২০২৩ ইং তারিখ বিবাদীসহ অপরাপর ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে The Penal Code 1860 এর ৩৪২/৩৫৭/৪০৬/৪২০/৩৫৮/৩৮৬/৫০৬/৩৪ ধারা বাঁশখালি আমলী আদালতে সিআর- ১০৫৯২/২০২৪নং মামলা‌ দায়ের করিয়াছে যাহা বর্তমানে পিবিআই কর্তৃক তদন্তাধীন রহিয়াছে। সম্প্রতি উক্ত মামলায় বাদীর নিয়োজিত বিজ্ঞ আইনজীবীর মারফতে বাদী জানিতে পারেন যে বিবাদী বাদীর স্ত্রী দাবি করিয়া একটি কাবিননামা দাখিলপূর্বক বাদীর বিরুদ্ধে ২৬/০৯/২০২৩ খ্রি তারিখে যৌতুক নিরোধ আইনে সিআর ৯৬৮৫/২০২৩নং মামলা করিয়াছেন। উক্ত মামলায়

চলমান পাতা- ০৫

পাতা- ০৫

খবর জানিয়া বিগত ২৭/০৯/২০২৩ইং তারিখে বাদী তাহার বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে উক্ত মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করিয়া ইহা দেখিয়া বিস্মিত হই, কেননা উক্ত মামলায় বিবাদী দাবি করেন যে, বিগত ৩১/০৮/২০২৩ খ্রি তারিখ নিকাহ রেজিস্ট্রির মাধ্যমে তার সাথে বাদীর বিবাহ হয় এবং বিবাহ কালে তার অভিভাবকগণ বাদীকে উপহার সরূপ বিভিন্ন পদের ফার্নিচার প্রদান করেছেন। অথচ ৩১/০৮/২০২৩ খ্রি তারিখে বাদী পুরো দিন বাদীর কর্মস্থল বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের ফেনী শাখায় বাদীর নিয়মিত কাজে উপস্থিত ছিলেন এমনকি উক্ত তারিখের আগে পরে সকল কর্ম দিবসে বাদী বাদীর অফিসে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন। ফেনী শহর হইতেও বাদী কোথাও যাইনি। তদ্ প্রমাণে বাদীর অফিসের হাজিরা খাতার সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করা হইয়াছে।

৪। উল্লেখিত মোকদ্দমার তর্কিত বিষয়বস্তু নালিশী কাবিননামা দৃষ্টে দেখা যায়, বরের উকিল হিসেবে মোঃ নাছির উদ্দিনকে, বিবাহের সাক্ষী হিসেবে ওবাইদুর রহমানকে, বিবাহ পড়ানো ব্যক্তি হিসেবে মোঃ জামাল হোসাইনকে এবং নিকাহ রেজিস্টার হিসেবে কাজী মৌলানা জামাল উদ্দীনকে দেখানো হয়েছে। উক্ত কাবিননামা মতে ২৩/০২/২০২৩খ্রি বিবাদীর সাথে বিয়ের কথাবার্তা হয়। অথচ বাদীর  বিরুদ্ধে ২৬/০৯/২০২৩ইং তারিখে ফৌজদারী মামলা দায়ের করিয়াছে। এমনকি বিবাদীপক্ষ কর্তৃক তাহাদের সৃজনকৃত বিবাহের হলফনামায় ২৩/০২/২০২৩ইং তারিখে নিকাহ্‌নামা রেজিষ্ট্রি করিয়াছে মর্মে উল্লেখ থাকিলেও তর্কিত নিকাহনামায় তাহা রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ বিগত ৩১/০৮/২০২৩ইং তারিখে দেখানো হইয়াছে। বিবাহের হলফনামা ও নিকাহ্‌নামায় উল্লেখিত নিকাহ্‌নামা রেজিষ্ট্রেশনের দিন ভিন্ন হওয়ায় ইহা প্রতিয়মান হয় যে বিবাদীপক্ষ মিথ্যা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুল তথ্য দিয়া ভূয়া কাবিননামা সৃজন করিয়াছে যাহাতে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানি করিতে পারে। বাদীর বিগত ৩০/০৫/২০২৩ ইং তারিখে সি/আর ১০৫৯২/২০২৩নং মামলা দায়েরের ০২ মাস ০২দিন পর মামলা চলাকালিন অবস্থায় ৩১/০৮/২০২৩ খ্রি তারিখে রেজিস্ট্রিকৃত কাবিননামামূলে বিবাদীকে বিবাহের দাবি সাধারণ প্রজ্ঞায়ও বিশ্বাসযোগ্য নহে। কাবিননামায় কন্যার উকিল হিসেবে প্রদর্শিত মোঃ ওসমান এবং বরের উকিল হিসেবে প্রদর্শিত নাছির উদ্দীন বাদীর কেউ নন এবং বাদী আরোও খবরা-খবর নিয়া জানিতে পারেন যে, মোঃ ওসমান জান্নতুল ফেরদৌস এর আপন ভাই এবং  নাছির উদ্দীন জান্নতুল ফেরদৌস এর চাচাতো ভাই। বস্তুত কাবিননামায় উল্লেখিত উকিল, সাক্ষী, নিকা রেজিস্টার, এবং বিবাহ পড়ানো ব্যাক্তির সাথে বাদীর কোনদিন দেখাই হয়নি। যার ফলে এটি সুস্পষ্ট যে, বাদীর দায়েরি মামলার দায় হতে বাঁচার লক্ষ্যে বিবাদী ও বিবাদীর পক্ষের লোকজন প্রতারণার অভিপ্রায়ে ২৫/০২/২০২৩ খ্রি তারিখে বাদীর নিকট হতে জোরপূর্বক

চলমান পাতা- ০৬

পাতা- ০৬

আদায়কৃত কাগজাত দ্বারা ভুয়া কাবিননামা সৃষ্টি করিয়াছে অথবা সম্পূর্ণ মিথ্যা কাবিননামা সৃষ্টি করিয়া জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত কাবিননামাকে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করিয়া মিথ্যা বিবাহ ও যৌতুকের দাবিতে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করিয়াছেন।

৫। মামলার হেতুঃ বিগত ২৬/০৯/২০২৩ইং তারিখে বাদীর বিরুদ্ধে আনিত সিআর ৯৬৮৫/২০২৩নং মামলার কাগজপত্র উত্তোলন করিয়া বাদী দেখিতে পারেন যে অত্র মোকদ্দমার বাদীকে বর এবং বিবাদীকে কণে সংবোধন করিয়া একখানা নিকাহ্‌নামা সৃজন করিয়াছেন। অত্রাদালতের এখতিয়ারাধিন এলাকায় উক্ত তর্কিত নিকাহ্‌নামা/কাবিননামার সম্পর্কে বাদী ২৭/০৯/২০২৩ইং তারিখে জানিতে পারেন বিধায় উক্ত দিনে অত্র মামলার হেতু উদ্ভব হইয়াছে।

৬। মামলার মূল্যায়নঃ বাদী নালিশী কাবিননামা অবৈধ সংক্রান্তে ঘোষণা মূলক প্রতিকারের প্রার্থনায় অত্র মামলা দায়ের করায় বাদী আদালতের এখতিয়ার নির্ধারণ ও কোর্ট ফি আদায়ের উদ্দেশ্যে তর্কিত কাবিননামার অপরিশোধিত দেনমোহরের পরিমাণকে  মামলা- ১২,০০,০০০/- (বারো লক্ষ টাকা) টাকা মূল্যায়ন করিলেন । আইনের বিধান মতে দুটি ঘোষণামূলক প্রার্থনার জন্য ৩০০x২= ৬০০/- টাকা টিকা কোর্ট ফি আদায় করিলেন।

অতএব বাদী প্রার্থনা করেন যে,

(ক)    নালিশী কাবিননামা  এবং বাদী বিবাদীর মধ্যকার বিবাহ অবৈধ মর্মে ঘোষণামূলক ডিক্রি  প্রদানে মর্জি হয়।

(খ)    নালিশী কাবিননামার শর্তসমূহ, দায় দায়ীত্ব, কর্তব্য পালনে বাদী বাধ্য নহে মর্মে ঘোষণামূলক ডিক্রি  প্রদানে মর্জি হয়।

 (গ)   বিবাদীপক্ষের বিরুদ্ধে মোকদ্দমার খরচের ডিক্রি প্রদানের মর্জি হয়।

(ঘ)    বাদীগণ আইনত: ও ন্যায়ত: যে সকল প্রতিকার পাইতে পারে তাহা প্রদানের মর্জি হয়।