দেওয়ানী আপীল মামলার নমূনা। আপীল মামলার হেতু সমূহ।

Post NO-108

মাননীয়

জেলা জজ আদালত,ফেনী।

       জেলা- ফেনী।

দেওয়ানী আপীল মামলা নং       ১৮ইং।

       (তাঁহার দেওয়ানী আপীল এখতিয়ারাধীন)

১। তাজুল ইসলাম, পিতা- মৃত আবদুল হাকিম, সাং- সেতুভাঙ্গা,

      থানা- বেগমগঞ্জ, জেলা- ফেনী।

                                                বাদী/ অ্যাপিল্যান্ট

বনাম

১। গোলাপ বিয়া- জং মৃত মুশফিকুর রহমান

২। আবু ইউসুফ

৩। আবু সুফিয়ান

৪। ফুলেরা বেগম                            

৫। মনোয়ারা বেগম

৬। ধনেরা বেগম       সর্ব পিতা- মৃত মুশফিকুর রহমান, সাং- সেতুভাঙ্গা

৭। ছাবেরা বেগম        পোষ্ট- আফতাববিবির হাট ,থানা- ফেনীসদর,

৮। নাছিমা বেগম                  জেলা- ফেনী

৯। মাসুদা বেগম

                                             মূল বিবাদী / রেসগনডেন্ট গন

প্রসঙ্গঃ- বেগমগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দেং ৫৬/২০০৭ইং মামলায় উক্ত আদালতের জজ জনাবা রাজিয়া সুলতানা কর্তৃক বিগত ২০/৮/২০১৮ইং তারিখের রায় ও বিগত ২৮/৮/১৮ইং তারিখের ডিক্রি দ্বারা বাদী / আপীল্যান্ট ক্ষতিগ্রস্থ হইয়া উক্ত রায় ডিক্রির অসম্মতিতে নিম্ম হেতুসহ অপরাপর হেতুতে অত্র আপীল মামলা আনয়ন করিতেছেঃ-

হেতু সমূহ এইঃ-

১। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত আইন ইকু্যুইটি ও নথিস্থ প্রমানের আলোকে বাদীর মামলার ডিক্রী দেওয়া একান্ত উচিত ছিল।

২। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত সকল বিচার্য্য বিষয়  একত্রে আলোচনা করে নিষ্পত্তি করিয়া একান্ত ভুল করিয়াছে।

৩। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত বিচার্য বিষয় সমূহ পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনা করিয়া সিদ্ধান্ত দিয়ে নিষ্পত্তি করা উচিত ছিল।

৪। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত বাদী/আপীল্যান্ট নালিশী দানপত্র দলিল Null & Void

ঘোষনার জন্য মামলা আনায়ন করায় দলিল দাতা গ্রহীতা ছাড়া আর কোন ব্যক্তিকে পক্ষ করা ব্যতীত অপর কোন ব্যক্তি মামলার পক্ষ না থাকায় অনাহুত ভাবে পক্ষ দোষে বাদীর মামলা অচল সাব্যস্ত করিয়া একান্ত ভূল করিয়াছে।

৫। সেতুভাঙ্গা মৌজার সি,এস ১১নং খতিয়ানের স্থিতিবান রায়তি স্বত্ত্বে ১৮২ ডিং ভূমি তমিজ উদ্দিন কামলা মালিক থাকায় তাহার মৃত্যুতে আমির বকস ও রহিম বকস দুই পুত্র পিতার ওয়ারিশ সূত্রে প্রত্যেকে ৯১ ডিং ভুমি করে মালিক দখলকার হয়। রহিম বকসের মৃত্যুতে  ৯-১৪নং বিবাদীর মৌরশ কালা মিঞা এবং ১৫-১৭নং বিবাদীর মৌরশ চন্দু মিঞা এবং ১৮-২৩নং বিবাদী মৌরশ চাঁন মিঞা কে ৩ পুত্র এবং মরিয়ম বিবি, খাতিজা বিবিকে ২ কন্যা রাখিয়া যায়। অপরদিকে আমির বকসের মৃত্যুতে ১নং বিবাদীর পিতা এবং ২-৮নং বিবাদীর দাদা ছৈয়দ আহাং এবং বাদীর পিতা দুদু মিঞা এবং নাজির আহাংকে তিনপুত্র রেখে যায়। দুদু মিঞা ও ছৈয়দ আহাং ও নজির আহাম্মদ ভ্রাতা ত্রয় উক্ত ৯১ ডিং ভূমি আন্দরে প্রত্যেক ভ্রাতা ২৪.৮২ ডিং এবং ভগ্নি ছায়েরা খাতুন ১২.৪১ডিং এবং তাহাদের মাতা ফাতেমা খাতুন ১১.৩৭৫ ডিং ভূমি ফরায়েজ মতে হিস্যার ভুমির মালিক হয়। তবে নাজির আহাং মৌখিক আপোষ বন্টনে ২২.৫০ডিং ভুমি নিয়াছেন। দুদু মিঞা ও ছৈয়দ আহাং তাহাদের ভ্রাতা নজির আহাং বরাবরে বিগত ২৮/১/১৯৫৬ইং তারিখের রেজিঃ ৮৫৬নং দররায়তি কবুলিয়াত প্রদানে ২২.৫০ ডিং ভুমি বন্দোবস্ত নিলে নজির আহাম্মদ বন্দোবস্ত মূলে ঐ ভূমি দখল প্রদান করিয়াছেন। উক্ত বন্দোবস্তের স্বীকারে নজির আহাম্মদ কবুলিয়াতে দস্তখত দিয়া গ্রহণ করিয়াছেন। উক্ত কবুলিয়াত নজির আহাং গ্রহণ করে ২২.৫০ ডিং ভূমি বন্দোবস্ত দিয়া নিঃস্বত্ত্ব বান হন। তদাবস্থায় নজির আহাংকে দাতা দেখাইয়া ১নং বিবাদীর স্বামী ছিদ্দিক আহাম্মদ এবং ৩-৮নং বিবাদীর মৌরশ ছাদেক আলী গ্রহিতা হইয়া বিগত ২৯/১/৭৩ইং তারিখের রেজিঃ ৭৫৯নং দানপত্র দলিল ১৮ ডিং ভুমি বাবতে সৃজন করিলেও উক্ত দানপত্র দলিলের আবৃত ভুমি কোন দখল পায় নাই। কেননা নজির আহাং তাহার ভ্রাতাগন কে বন্দোবস্ত দিয়া ঐ ভূমি হইতে নিঃস্বত্ত্ব বান ও দখল বিহীন হইয়া যায়। দুদু মিঞা তৎ পুত্র বাদীকে তাহার পৈত্রিক ওয়ারিশী ভুমি এবং কবুলিয়তের অধ্যাংশের ভুমি সহ সর্ব মোট ৬১ ডিং ভুমি বিগত ২৭/১/৯৩ইং তারিখের রেজিঃ ৬৮৯নং দানপত্র দলিল মূলে দান করিয়া নিঃস্বত্ত্ব বান অবস্থায় মারা গিয়াছে। সেতুভাঙ্গা মৌজার বি,এস জরিপ অনুষ্ঠিত হইয়াছে। নালিশী ভুমি বাদীর পিতার নামে ও বাদীর নামে ঐ বি,এস জরিপে ঐ মৌজায় মাঠ জরিপে ৩৫৪নং খতিয়ান এবং ডি.পি ২০২নং খতিয়ান প্রস্তুত ও প্রচারিত হইয়াছে। বাদীর পিতার মৃত্যুতে বাদী তাহাতে মালিক দখলকার হইয়াছে।

৬। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত দুদু মিঞা ও ছৈয়দ আহাং তাহাদের ভ্রাতা নজির আহাং হইতে রায়তি স্বত্ত্বের অধীন দর রায়তি স্বত্ত্বে বন্দোবস্ত নিয়াছে। বন্দোবস্ত গ্রহীতা ছৈয়দ আহাম্মদের পুত্র ১নং বিবাদী ছিদ্দিক আহাং এবং ছাদেক আলী বর্নিত ৭৫৯ নং দানপত্র দলিল দুদু মিঞার পুত্র বাদীর ক্ষতি করার জন্য সৃজন করায় উক্ত দান পত্র দলিলের দাতার স্বত্ত্ব পূর্বেই বন্দোবস্ত দিয়ে নিঃস্বত্ত্ব বান হওয়ায় পরবর্তীতে দানপত্র করিলেও ঐ দলিলের ভূমি Delivery Of Possesion না হওয়ায় তাহা উক্ত দানপত্র দলিল ভূঁয়া, তঞ্চক ও অকার্য্যকারী এবং Null &Void ঘোষনার ডিক্রী দেওয়া একান্ত উচিত ছিল।

৭। বিজ্ঞ নিম্ম আদালতের সেতুভাঙ্গা মৌজার সি,এস ১১নং রায়তি স্বত্ত্বের স্বত্ত্ববান ৮৫৬নং দররায়তি কবুলিয়ত হওয়ায় উপরি স্বত্ত্বের তথা রায়ত্তিস্বত্ত্বের তথা  খাজনা প্রাপকের  মালিক থাকেন কবুলিয়াত গ্রহীতা নজির আহাম্মদ, উক্ত দর রায়তি কবুলিয়াত টি জমিদারী উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইনের বিধান মতে কবুলিয়তের উপরিস্বত্ত্ব বিলুপ্ত হইলে দররায়তি স্বত্ত্বে কবুলিয়ত দাতা দুদু মিঞা গং¡ মালিক হওয়ায় ঐ কবুলিয়াতের ঐ ভূমি জমিদারী উচ্ছেদের পর রায়তি স্বত্ত্ব স্বরুপে নজির আহাং হইতে ছিদ্দিক আহাং এর পিতা ছৈয়দ আহাং ও ছাদেক দানপত্র গ্রহণ করিতে পারার অধিকারী নহে। নজির আহাং ঐ দর রায়তি কবুলিয়ত গ্রহণের পরে রায়তিস্বত্ত্ব স্বরুপে শুধু খাজনা পাওয়ার অধিকারী ছিল মর্মে সাব্যস্তে তর্কিত দানপত্র Null &Void ঘোষনার ডিক্রী দেওয়া একান্ত উচিত ছিল।

৮। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত রায়তিস্বত্ত্বে ও দর রায়তি স্বত্ত্বে একই ব্যক্তি স্বত্ত্বাধিকারী তথা মালিক থাকার আইনে কোন বিধান না থাকায় বাদীর স্ত্রী ও দলিল লিখক আইনগত স্বত্ত্ব স্বার্থের বিষয়ে অনভিজ্ঞ হওয়ায় ১৯/৪/০৫ইং তারিখের ২৯৬৫নং দানপত্র দলিল এবং ২/২/০৫ইং তারিখের ৬৯৯নং কবলা দলিল এবং ১৯/৯/০৫ইং তারিখের ৭৮৩২ নং দানপত্র দলিল তথা দর রায়তির উপরিস্বত্ত্বে রায়তি জমি খরিদ করিলে আইনের বিধান মতে তাহা Estoppel দ্বারা বারিত হবে না এবং আইনের ভূল কে বাদীর নিয়োজিত মহিলা আইনজীবি ও ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম না হওয়ায় আদালত তাহার সিদ্ধান্তে নিতে ভূল করায় তর্কিত রায় ডিক্রি বাতিল যোগ্য বটে।

৯। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত বাদীপক্ষের পিতা দুদু মিঞা গংদের দররায়তি কবুলিয়াত কি কবুলিয়াত গ্রহীতা তথা বন্দোবস্ত দাতা নজির আহাং হওয়ায় তাহার নিকট হইতে বাদীর নিয়োজিত আইনজীবি কে আদালত যোগে আসল কবুলিয়াত তলব না দিয়া অথবা কবুলিয়াতের সহিমোহর সংক্রান্ত নকলের বালাম তলব দিয়া প্রদর্শনী তালিকায় অর্ন্তভুক্ত না করিলে ও বিবাদীপক্ষ কর্তৃক উক্ত দর রায়তি কবুলিয়ত ভূঁয়া, Null &Void বলিলে ও চলিবে না তজ্জন্যে কোন মামলা না করিয়া বাতিল না চাওয়ায় বাদীর মামলা ডিক্রী দিতে আইনগত গুরুতর কোন বাঁধা না থাকায় তর্কিত রায় ডিক্রী বাতিল যোগ্য বটে।

১০। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত দর রায়তি বন্দোবস্তের কবুলিয়াতটি কবুলিয়াতের গ্রহীতা নজির আহাং দস্তখত দিয়ে স্বীকার পূর্বক গ্রহণ করায় তাহা একতরফা কবুলিয়াত নহে ধরে নেয়া হয় কিন্তু নিম্ম আদালত কবুলিয়াতে Admission দেখা যায় না মর্মে ভূল করেছেন বরং তাহা Bilaleral তথা দ্বিপাক্ষিক বন্দোবস্ত হয় তদহেতু বিবাদীপক্ষের নালিশী দানপত্র টি ঠড়রফ  ঘোষনার নিমিত্তে¡ বাদী /আপিল্যান্টকে ডিক্রী দেওয়া উচিত ছিল।

১১। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত বাদী কবুলিয়াত টি Execuling Witness দিয়ে প্রমানের কথা বলেছেন কিন্তু  Execuling Witness বলতে কোন কথা নাই। কবুলিয়াতে যাহারা Attesting Witness ছিল তাহারা মারা যাওয়ায় স্বাক্ষী দেওয়া সম্ভব নহে ও ছিল না সাব্যস্তে কবুলিয়াতটি বৈধ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়া তর্কিত দানপত্র Void ঘোষনার ডিক্রি দেওয়া একান্ত উচিত ছিল।

১২। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত নালিশী ২৯/১/৭৩ইং তারিখের ৭৫৯নং দানপত্র দলিল ১নং মূল বিবাদী বাদীর নিকট বিগত ২০/২/০৭ইং তারিখে প্রকাশ করায় বাদীর জানার তারিখ ( From The Date Of Knowleage) থেকে উচ্চাদালতের নজিরের মর্মমতে তামাদি গণনা করা হইবে বিধায় বাদী নালিশী দানপত্রের জানার তারিখের পরপর মামলা দায়ের করায় তামাদীতে বারিত বলিয়া একান্ত ভূল করিয়াছেন।

১৩। নালিশী ৭৫৯নং দানপত্র দলিলদ্বারা বাদীর স্বত্ত্ব স্বার্থের ক্ষতির কারণ হওয়ায় নালিশী দলিলের দাতা গ্রহীতা অর্থ্যাৎ দলিলে যাহারা পক্ষ আছে এবং দলিল দ্বারা যে Affected হয় শুধু সে বা তাহারাই দলিল Void  ঘোষনার মামলায় আবশ্যকীয় পক্ষ হইবে বিধায় অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিগনকে বাদীর নিয়োজিত এডভোকেট আইনের বর্হিভূত ভাবে পক্ষ করিলেও আদালত আবশ্যকীয় পক্ষ নহে গণ্য করে পক্ষ দোষের বিষয়ে ইস্যূ গ্রহন করা আদৌ উচিত হয় নাই।

১৪। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত কবুলিয়াত গ্রহীতা কবুলিয়াতে গ্রহণ পূর্বক স্বীকৃতি যুক্ত দস্তখত থাকায় Counter Deed তথা পাট্টার প্রয়োজন নেই। কবুলিয়াতে গ্রহীতা নজির আহাম্মদ এর স্বীকারোক্তি মূলক দস্তখত থাকায় তাহা না দেখিয়া তর্কিত রায় ডিক্রিতে কবুলিয়াতে Addmission দেখা যায়না বলিয়া একান্ত ভূল করিয়াছেন।

১৫। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত নজির আহাং এর ভ্রাতা ছৈয়দ আহাম্মদ এর দুই পুত্র ছিদ্দিক ও ছাদেক আলীকে বিগত ২৯/১/১৯৭৩ ইং তারিখে ৭৫৯নং দানপত্র মূলে নজির আহাং স্বয়ং দলিলটি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন এবং । বিবাদী পক্ষ তাহাতে দখলে আছেন এবং বিবাদীপক্ষ ঐ দানপত্রের অস্তিত Existence দাবী করেন বিধায় উক্ত দলিল ও আপীলাধীন মামলার Burden of Proof বিবাদীপক্ষের উপর বর্তায় হেতু তাহা বিবাদীপক্ষ প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাদীকে ডিক্রী দেওয়া একান্ত উচিত ছিল।

১৬। বিজ্ঞ নিম্ম আদালত বাদীর মামলা Barred By Estoppel তৎমর্মে কোন ইস্যূ ধার্য্য করেন নাই। বাদীর মামলা Estoppel থাকিলে পৃথক ইস্যূ ধার্য্য করিতে হয় কিন্তু Estoppel না থাকা স্বত্ত্বেও রায়ে উল্লেখ করিয়া একান্ত ভূল করিয়াছেন।

                           অতএব, বাদী /আপীল্যান্ট বিনীতভাবে প্রার্থনা করেন যে, অত্র আপীল মামলা গ্রহণ করতঃ নিম্ম আদালতের নথী তলবে আনিয়া শুনানীক্রমে নিম্ম আদালতের রায় ডিক্রি বাতিল করিয়া অত্র আপীল মামলা মঞ্জুর করার মর্জি হয়।

              বক্রী বাচনিক শুনানী কালে নিবেদন করা হইবে।

সার্টিফিকেট

অত্র আপীল মামলার অজুহাত সমূহ ও নথিপত্র পর্য্যালোচনা করিয়া আপীল মামলা প্রস্তুত করিয়াছি। অত্র আপীল মামলায় জয় লাভের উজ্জল সম্ভবনা আছে। আমি আপিল্যান্ট পক্ষে শুনানী কালে তাহা উপস্থাপন করিব।

এডভোকেট